Popular Post

Posted by : Sayantari Ghosh Sunday, October 21, 2012


আচ্ছাবল দেখিনিকেতকী ফুলে পুজো হতে দেখেছো কখনও...? অথচ অমন গন্ধ কটা ফুলের আছে বল তো? তবুও কেন এরকম...?  হু হু... বাবা... গল্প আছে, গল্প... বসেই তো আছো দেখচি... শুনবে না কি...?
তাহলে বলি...?
ব্যাপারটা হল গিয়ে সে একবারের কথা... হঠাএকদিন সকালে মহাদেবের ঘুম ভাঙল মহা-চিত্কার চেঁচামেচিতে... চোখ রগড়ে দ্যাখেন কি,না,ব্রহ্মাঠাকুর আর বিষ্ণুঠাকুরের মধ্যে সাঙ্ঘাতিক ঝামেলা বেঁধেছে... দিনের কাজকর্ম কিচ্ছু শুরু হয়নি... ঝগড়ায় বিশ্বদুনিয়া সব তোলপাড়,তটস্থ...!!

কি হয়েছে?  না, সেই পুরোনো সমস্যা... কে বড়,কার দরকার বেশি,সেই নিয়ে মনকষাকষি... তারপর একদুটো রাগারাগির কথা... বাড়তে বাড়তে সমস্যা এখন তুঙ্গে...!!
মহাদেব বুঝলেন তাঁকে ছাড়া গতি নেই... দুজনেই মরিয়া হয়ে উঠেছেন,যুক্তির থেকে উপরে গলা তুলেছে অযৌক্তিক সব কথা... একটা তুলনা করে দুজনকে বুঝিয়ে দিতে হবে,দুজনেই সমান... এ’ছাড়া উপায় নেই...
যেই ভাবা সেই কাজ। সটান গিয়ে দাঁড়ালেন দুজনের মাঝে...বললেন শান্ত হোন আপনারা...পরীক্ষা করেই দেখা যাক না,কে বড়...
মূহুর্তের মধ্যে দুই দেবতার মাঝে দাঁড়ানো মহাদেব একখানা বি-শা-আ-আ-ল আলোর স্তম্ভ হয়ে গেলেন... আকাশ জুড়ে গমগম করে উঠল তাঁর কন্ঠস্বর...
একজন উর্ধ্বপানে,একজন অধোপানে যান,
যে আগে পাবেন শেষ, তার জয় ... করুন প্রস্থান...
ব্যাস... আর পায় কোথায়...?  তক্ষুনি দু’জনে দু’দিকে লাগালেন ছুট...!!!

বিষ্ণু যাচ্ছিলেন পাতালের দিকে... আলোর স্তম্ভের পাশে পাশে চললেন,চললেন আর চললেন... কিন্তু শেষ কোথায়...? যতদূর চোখ যায় সে আলো আগে, আরো আগে এগিয়ে গেছে... বিষ্ণুর জোরে জোরে শ্বাস পড়তে লাগল... হাঁফিয়ে গেলেন একেবারে... নাঃ! আর পারা যায় না... এ আলেয়ার পিছু করার চেফিরে যাওয়াই ভালো... এ নির্ঘাত্‌ মহাদেব কিছু ফন্দি ফেঁদেছেন...! আর দেরী না করে ফেরার পথা পা বাড়ালেন বিষ্ণু।
দিকে ব্রহ্মার অবস্থাও তথৈবচ! হাঁফিয়ে-ঝাঁপিয়ে ঘেমে-নেয়ে গেছেন... কি করবেন ভাবছেন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে,হঠাৎ দ্যাখেন ফুলের রানী কেতকী উপর থেকে হাওয়ায় ভেসে ভেসে নেমে আসছে। ব্রহ্মার মাথায় এক দুষ্টুবুদ্ধি চাপলো। কেতকীকে খপ করে ধরে বললেন, “চল আমার সাথে,বিষ্ণুকে বলবে যে তোমায় আমি এই আলোর স্তাম্ভের শিখর থেকে নিয়ে এসেছি...
ভয় পেয়ে কেতকী বলতে গেল বাধা দিয়ে, “ওমা,সে কি??!  কিন্তু...
চুউউপ! যা বলছি বলবে, নাহলে না...গর্জে ওঠেন ব্রহ্মা! ভয় পেয়ে একেবারে সিঁটিয়ে গেল কেতকী।
ছুটে ছুটে বিষ্ণুর কাছে ফিরে এলেন ব্রহ্মা। তাঁর চোখের সামনে কেতকী কে ধরে বললেন, “হেঃ হেঃ,এই যে... দ্যাখো দ্যাখো,প্রমাণ দ্যাখো,আমি শেষ ছুঁয়ে ফিরে এসেছি... কেতকী তো সেখানেই থাকে... কি হে, বল?” বলে কেতকীর দিকে তাকান তিনি...

বেচারী কেতকী! কি আর করে...! হ্যাঁ...বলে যেই না মাথা নেড়েছে,অম্নি মহাদেব রেগে আগুন হয়ে মূর্তিমান হলেন... এমন মিথ্যাচার...! তাও আবার স্বয়ং মহাদেবের সামনে...!!
তত্ক্ষণাৎ শাপ দিলেন মহাদেব,
সব সুরভী মরবে কেঁদে আমার পরশ বিনে,
পুজোর ঘরের দুয়োর’টি তুই কক্ষনো ছুঁবি নে...
ব্যাস...! মহাদেবের কথা,এক কথা...! কেতকী অনেক কেঁদেছিল,কোন ফল হয় নি... সেই লঘুপাপের গুরুদন্ড মাথায় নিয়ে কেতকী আজও পুজোর ঘরের দুয়োর ছোঁয় না...।
এইরকমের একটা গপ্পো পারিজাতেরও আছে...
পারিজাত... মানে আদর করে যাকে শিউলি নামে ডাক দাও,সেই ফুল... সে নাহয় আরেকদিন শোনাবো...

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

- Copyright © পাঁচমিশেলি - - Powered by Blogger - Designed by সায়ংতরী -