Archive for November 2012
পুষ্পপুরাণঃ পারিজাত
By : Sayantari Ghosh
সে তো মর্ত্যের নয়। স্বর্গের ফুল... গোলোকে বিষ্ণুর সোনার সিংহাসনের আকাশ সুগন্ধে মাতিয়ে রাখে... আর কারণে-অকারণে পায়ের কাছে ঝরে পড়ে পড়ে ধবধবে গালিচা বিছিয়ে দেয়... তাই তো অমন নাম... পারিজাত...!
পারিজাত’কে মর্ত্যে আনার কাজ’টি করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ... করেছিলেন বললে ভুল হবে... একরকম করতে বাধ্য হয়েছিলেন...!!
শুনেই চমক লাগল বুঝি...? ভাবছো,শ্রীকৃষ্ণ তো স্বয়ং বিষ্ণুর অবতার... কত কি কঠিন কঠিন কাজই না করে গেছেন তিনি... তাঁকে বাধ্য হতে হল... এ অসম্ভব কাজ’টি করল কে???
কে আবার...? তাঁর দুই রাণী... রুক্মিনী আর সত্যভামা...!
সে গল্পটির শুরুও ঝগড়াঝাঁটি দিয়ে... সেই একই ঝগড়া... কে বড়...? যার আসল মানে হল, শ্রীকৃষ্ণের সকল রাণীর মধ্যে প্রিয়তমা কে? সত্যভামা? না কি রুক্মিনী?
দুজনেই জোর গলায় রাজ্যের সব রকমারী দাবী করতে লাগলেন...
একজন বলেন,তাঁর বলার অপেক্ষা... কৃষ্ণ গজদন্তের প্রাসাদ গড়িয়ে দেবেন একরাত্তিরের মধ্যে...
আর একজন বলেন,তাঁর মুখের কথা খসলেই কৃষ্ণ এক’শ পক্ষীরাজে টানা রথ এনে দাঁড় করিয়ে দেবেন দুয়োরের পাশে...
এমনি করে কথায় কথায় কথা বেড়ে বেড়ে পাহাড়প্রমাণ হয়ে গেল...
দুজনেই জোর গলায় রাজ্যের সব রকমারী দাবী করতে লাগলেন...
একজন বলেন,তাঁর বলার অপেক্ষা... কৃষ্ণ গজদন্তের প্রাসাদ গড়িয়ে দেবেন একরাত্তিরের মধ্যে...
আর একজন বলেন,তাঁর মুখের কথা খসলেই কৃষ্ণ এক’শ পক্ষীরাজে টানা রথ এনে দাঁড় করিয়ে দেবেন দুয়োরের পাশে...
এমনি করে কথায় কথায় কথা বেড়ে বেড়ে পাহাড়প্রমাণ হয়ে গেল...
খবর পেয়ে কৃষ্ণ যখন এসে পৌঁছোলেন,তখন সেসব দাবীর বহর মর্ত্যলোক ছাড়িয়ে দেবলোকে উঁকিঝুঁকি মারছে...!
দুজনেই এসে চোখে কাজলজল উজাড় করে,মুখভার করে বললেন,
“যদি ওকে চাও ওর কাছে থাকো,আমি তবে ছাড়ি হাত...
আর,
যদি ভালোবাসো তবে এনে দাও স্বর্গের পারিজাত...”
আর,
যদি ভালোবাসো তবে এনে দাও স্বর্গের পারিজাত...”
সব্বোনাশ!! শুনেই তো শ্রীকৃষ্ণের চক্ষু চড়কগাছ! স্বর্গের পারিজাত!!! তাকে পৃথিবীতে আনাই তো মহাশক্ত কাজ! ‘এনে দাও’ বললেই তো আর তার এনে দেওয়া যায়না... তার উপর এনে দেবেনই বা কাকে? রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে তো আরেকদিকে... আর তার চেয়েও বড় কথা, প্রাণের ভয় বলেও তো একটা বস্তু আছে কৃষ্ণঠাকুরের...!
ভাবনায় ঘুম উড়ে গেল শ্রীকৃষ্ণের চোখের পাতা থেকে... রাতভর ঘুম আসেনা... কি করেন... কি করেন... কি করে সামলানো যায় দু’জনকে...
শেষমেশ অনেক ভেবে ভোররাতের দিকে এক দারুণ ভাবনা ঝিলিক দিয়ে উঠল... একগাল হেসে শ্রীকৃষ্ণ চললেন পারিজাত আনতে।
**********************************************************************
ভোরবেলা, ঘুম ভেঙে সত্যভামা দেখলেন যে তাঁর আঙিনার দক্ষিণকোণের পাঁচিলধার আলো করে রয়েছে অ-পূ-র্ব এক অজানা ফুলের গাছ... সারা প্রাসাদ ম ম করছে স্বর্গীয় সুরভিতে...
আর পাঁচিলের ও'ধারে, রুক্মিনীর উঠোনের উত্তরকোণের শিশিরভেজা ঘাস জুড়ে বিছিয়ে আছে সাদার উপর ছোট্ট ছোট্ট কমলা ফুটকি দেওয়া একখান নরম গালিচা...
আর পাঁচিলের ও'ধারে, রুক্মিনীর উঠোনের উত্তরকোণের শিশিরভেজা ঘাস জুড়ে বিছিয়ে আছে সাদার উপর ছোট্ট ছোট্ট কমলা ফুটকি দেওয়া একখান নরম গালিচা...
Tag :
পুঁথি-পাঁচালি-পুরাণের গল্প,